Skip to main content

অগ্নিসেনা মারুফ এর করোনা জয়ের গল্প : পিরোজপুর

মো: মারুফ হোসেন। পেশায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে ফায়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন।কিছুদিন আগেও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন মারুফ ।ইতিমধ্যে করোনা থেকে পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন তিনও।সেই সুস্থ্য হয় ওঠার গল্প মারুফ নিজেই পিরোজপুর জেলা ব্রান্ডি ওয়েবসাইট amarpirojpur.com কে লিখে পাঠিয়েছে যাতে মানুষ করোনায় ভীত না হয়ে অনুপ্রেরণা পায়।করোনা আক্রান্ত হলেই মানুষ যে মারা যাবে এমন ভাবনা টা ঠিক নয়,সঠিক মত পরিচর্যায় থাকলে করোনা থেকে সুস্থ্য হয়ে ওঠা সম্ভব। মারুফ তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে amarpirojpur.com কে লেখেন-

"প্রথমে আমার জ্বর আসে ২৮-০৬-২০২০ তাং এ। এর পড়ে আমি ছুটিতে বাড়ি চলে আসি। প্রাথমিক ভাবে ডাক্তার দেখাই এবং ডাক্তারের পরামর্শে ৩০-০৬-২০২০ তাং করোনা টেষ্ট দেই, হঠাৎ ০৫/০৭/২০২০ তাং  রাত ১১ টায় মোবাইলে একটা কল আসে,  যেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না ফোনের  ওপাশ থেকে বলছে  আপনার কোভিড-১৯ পজিটিভ, তখন নিজেকে খুব একটা অসহায় মনে হচ্ছিলো। এর পরে ০৬/ ০৭/২০ তাং থেকে আইসোলেশনে থাকা শুরু করি,   পুরো পরিবার থেকে আলাদা হয়ে গেলাম এবং এই একাকিত্বের যুদ্ধটা নিজেকে খুব একা একা মনে হচ্ছিলো,  তখন চিন্তা করলাম আমি একজন সৈনিক আমার ভয় পেলে হবে না, আল্লাহর রহমতে করোনাকে আমার জয় করতে হবে,  করোনাকে জয় করে আবার দেশ সেবায় নিয়োজিত হতে হবে।এই মন বল কে কাজে লাগিয়ে আমার যুদ্ধ শুরু হয়। মা- বাবা তাদের কাছ থেকে অনেক সাহস পেতাম। আমার ডিপার্টমেন্ট  এর সহকর্মী দের কাজ থেকেও অনেক সাহস পেতাম।
আমি যখন আক্রান্ত হই তখন আমার বাসায় একটি আলাদা রুমে থাকি , আমার সব কিছু আলাদা ছিলো, আমার রুমে কাউকে আসতে দিতাম না।আমার যখন খাবার দরকার হতো তখন আমার রুমের সামনে  ছোট একটি টেবিল ছিলো সেই টেবিলে খাবার রেখে দিয়ে যেত, তারা দূরে সরে যাবার পর সেই খাবার আমি নিতাম।আর একটি কথা যখন খাবার খেতাম তখন ভালো ভাবে হাত ধুয়ে নিতাম, প্রতি ২ ঘন্টা পর পর হাত ধুতাম।
ডাক্তারের  পরামর্শে প্রতিদিন গরম জলীয় বাষ্প নেয়া, রঙ চা, মাল্টা, লেবু, আনারস এগুলো খেতে থাকি। এবাবে ১৭ দিন পার করে ২৩-০৭-২০তাং সুস্থ হয়ে ওঠার  কাগজ হাতে পাই অর্থাৎ করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে আসে।
আমার ব্যাক্তিগত পরামর্শ  আমি নিজে যেটা করেছি  ভিটামিন ‘বি’ ও ‘ডি’ ক্যাপসুল এবং সিভিড সহ ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার খেতে থাকি। মাল্টা ও আপেল খাই প্রতিদিন দুই বেলা। বেশি করে আদা-লবঙ্গ দিয়ে চা বানিয়ে দিনে ৩-৪ বার খেয়েছি। আদা, দারচিনি, এলাচ, রসুন, লবঙ্গ দিয়ে পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে গরম ভাপ নিতাম দিনে ৪ বার (সর্বোচ্চ ৩ মিনিট করে) এবং চায়ের মতো খেতাম দুই বেলা। দিনে একবার কালোজিরা এবং মধু মিশিয়ে খেতাম। গলা ভেজা রাখতে খেতাম লবন মাখানো আদা। গোসলও করতাম হালকা গরম পানি দিয়ে।এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেইনি। প্রতিদিন ঘর জীবাণুমুক্ত করতাম স্প্রে দিয়ে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি বিভিন্নভাবে। এক কথায় নিজের সাহস ধরে রাখতে ভুলে যেতাম যে আমি করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী। এটা ঠিক যে কখনোই কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি আমার, তাই স্বাভাবিক থাকতে পেরেছি সহজে,করোনা আক্রান্ত হলে ভয়ের কিছু নেই। কারণ ভীত হয়ে পড়লে ক্ষতি হবে আরও বেশি। তাই সতর্ক এবং সাহসী হতে হবে। তাহলেই মিলবে সুস্থতা। যেমনটা এই মুহূর্তে আমি অনুভব করছি।"


Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে