Skip to main content

ফটোগ্রাফী নেশা থেকে পেশা পিরোজপুরের কৌশিকের

লিখেছেন :জি,এম-আদল

কৌশিক হাজরা

একটি ফটোগ্রাফ দর্শকের মগজে একটা গল্প তৈরি করে দেয় । একটা সময়ের গল্প, একটা মুহূর্তের গল্প, কখনও একটা জীবনের গল্প ।
আর ক্যামেরার কৌশলে যারা এই সৃজনশীল শৈল্পিক কাজটি করে থাকেন তাদেরকে বলা হয় ফটোগ্রাফার।তেমনি এক শৈল্পিক ফটোগ্রাফারের নাম কৌশিক হাজরা।
কালারস সট ফটোগ্রাফি টিম
আদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রমই যে মানুষকে সফল করে তুলতে পারে তা যে মানুষটি  দেখলে সহজে ই বোঝা যায় তিনি আর কেউ নয় আমাদের পিরোজপুরের  বহুল পরিচিত মুখ, তরুণ ফটোগ্রাফার,  "কালারস সট ফটোগ্রাফি"র স্বত্বাধিকারী ও এটির চীফ ফটোগ্রাফার কৌশিক হাজরা। ফটোগ্রাফি যার নেশা ও পেশা।ফেসবুকে অনেকেই যাকে আমরা জন কুশ নামেই চিনি।বয়সে তরুন এই ফটোগ্রাফারের জন্ম, বেড়েওঠা পিরোজপুরের মাছিমপুরে।পড়াশুনাও পিরোজপুরেই।
২০১৩ সালে তার প্রথম যাত্রা এই ফটোগ্রাফি জগতে। শুরুটা হয় একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে সেখানে কৌশিককে নিমন্ত্রন জানানো হয়েছিল কিন্তু সেখানে  তার কাছের বড় ভাইয়ের  একটা এস এল আর ক্যামেরা ছিল,ডি এস এল আর তখন অতোটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি সবার মাঝে৷  তার ঐ কাছের বড় ভাই তাকে উপেক্ষা করে তাকে ক্যামেরাটি দেয়নি।
ওই দিন থেকেই কৌশিকের মাথায় একটা জেদ চেপে বসে ক্যামেরা দিয়েই কিছু একটা করার।
কৌশিক হাজরা
এই পেশায় আশার ক্ষেত্রে অনেক বন্ধুরা তাকে উৎসাহ দিয়েছে।যেহেতু কৌশিকের বাবার স্টুডিও ছিল, বন্ধুরাও অনেকে কৌশিকের কাছে ছবি তোলার আবদার করত।কাছের বড় ভাইয়ের ক্যামেরা দেখতে না দেয়ার  জেদ আর বন্ধুদের ছবি তোলার আবদার সব মিলিয়ে এই পথচলার শুরু।এর পরে বাবার কাছে ক্যামেরা চাইলে বাবাও তাকে কিনে দিল  Canon eos 600 D crop sensor ক্যামেরা।এই ক্যমেরাটা দিয়েই পথ চলা শুরু।
২০১৩ সালে "কালারস সট ফটোগ্রাফি" নামে ফটোগ্রাফি পেজ  খোলেন। পেজের ফ্যান ফলোয়ার বাড়তে থাকে,তার ছবি তোলার আগ্রহও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। প্রথম যেহেতু একাই ছিলেন,তার কাজের প্রচারের লোক তেমন ছিল না তাই অনেকেরই ফ্রী ছবি তুলে দিয়েছেন কৌশিক।এর পরে এমন চলতে লাগল প্রায় ২ বছর। এর পরে একজন দুজন করে লোক নিয়ে একটা ছোট্ট টিম তৈরি করে টুকটাক বিয়ের কাজ শুরু করলেন।
জীবনের তার  প্রথম আনুষ্ঠানিক  ফটোগ্রাফী শুরু হয়েছিল খুলনায় একটি  বিয়ের ইভেন্ট দিয়ে।তখন হাতে ছিল মাত্র একটা ক্যামেরা, একটা কিট লেন্স, আর একটা ফ্লাস । এত সীমাবদ্ধাতার মাঝেও ক্লায়েন্ট তার ফটোগ্রাফিতে এতই খুশি হয়েছিল যে, এর পরে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঐ ক্লায়েন্টের  ফ্যামিলিরই ৫ টা ইভেন্ট করেছে কৌশিকের  প্রতিষ্ঠান  "কালারস সট ফটোগ্রাফি"। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নানা জায়গায় শতাধিক কাজ করেছে "কালারস সট ফটোগ্রাফি" এবং কৌশিক হাজরা।
কালারস সট ফটোগ্রাফী টিম

যাত্রার শুরুটা বাবার কিনে দেয়া Canon eos 600 D crop sensor ক্যামেরা দিয়ে শুরু হলেও এখন তার প্রতিষ্ঠানে রয়েছে অত্যাধুনিক অসংখ্য  ক্যামেরা,লেন্স সহ ৭ জনের একটি দারুন টিম।এই পথচলায় পেয়েছেন অনেক মানুষের ভালবাসা,হয়ে উঠেছেন অনেক তরুন ফটোগ্রাফারদের আইকন।
খুব সহজে তিনি এতদূর আসেননি। যতদূর এসেছেন তার জন্য প্রয়োজন হয়েছে সততা আর পরিশ্রমের।
আগামীতে বৃহৎ পরিসরে নিয়ে যেতে চান তার ফটোগ্রাফী প্রতিষ্ঠান  ''কালারস সট ফটোগ্রাফি"কে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফী নিয়ে দেশজুড়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে