Skip to main content

পিরোজপুরের জনপ্রিয় বাইক স্টান্ট রাইডার আকিব


লিখেছেন:জি,এম-আদল 

বাইকে করে ঘোরাঘুরি,বাইক স্টান্ট এ সবই যেন আকিবের নেশা।মোটরবাইক নিয়ে স্টান্ট মানেই প্রতি মুহূর্তে ঝুঁকি। জীবনও চলে যেতে পারে।তবু কেন এতো ‘স্টান্টবাজি?’। কথায় আছে "নো রিস্ক নো গেইন”।আর তারুণ্যের নেশাই হচ্ছে সাফল্যের লক্ষ্যে ঝুঁকি নেয়া।ঝুঁকি ছাড়া সাফল্য অধরাই থেকে যায়।
বাহন হিসেবে বাইক আমাদের কাছে যতটা জনপ্রিয় ততটা বিপজ্জনকও বটে। বাইক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকের অঙ্গহানি এমনকী মৃত্যুর ঘটনাও প্রায়ই ঘটে থাকে। আবার এই বাইকটাকে অনেকে এমনভাবে কব্জা করেছেন, তাদের স্টান্ট দেখলে চোখ কপালে ওঠে! বুকের ভেতর দুরুম দুরুম শব্দ হতে থাকে, এই বুঝি বাইক থেকে ছিটকে গেল রাইডার।
কারো কারো বাইক স্টান্ট দেখলে জাদুশিল্পীদের জাদুর মায়াজালে মোহিত হওয়ার মতো অবস্থা হবে আপনার ।তেমনি এক বাইক স্টান্টারের নাম আকিব।

২১ বছরের এই তরুনের পুরো নাম আকিবুর রহমান। জন্ম, বেড়ে ওঠা পিরোজপুরেই।পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে বর্তমানে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ এ ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতক পড়ছে।
ছোট বেলা থেকেই সাইকেলের প্রতি অসম্ভব রকমের দুর্বলতা ছিল আকিবের।সেই দুর্বলতা থেকেই ধীরে ধীরে বাইক স্টান্ট এর প্রতি ঝোক।
২০১৩-২০১৪ সালের দিকে  স্টান্ট লাইফের  প্রতি ঝোক বাড়লেও পড়াশুনার চাপের কারনে তখন ওতটা নিয়মিত হয়ে ওঠা হয়নি।২০১৯ এর দিকে মূলত পেশাদারিত্বের সাথে বাইক স্টান্ট  শুরু করে আকিব ।
আকিব আক্ষেপ করে বলে,”বিদেশে কিন্তু বিদেশিরা  বাইকস্টান্টকে একধরনের স্পোর্টস সেগমেন্ট বা খেলা হিসেবেই নেন।
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনও মানুষ স্টান্ট করাকে ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের অনেকেই এটাকে অপরাধ বলে মনে করেন।”
আকিব ২০১৯ সালে বাজাজ পালসারের উদ্যোগে এনটিভিতে বাইক স্টান্টভিত্তিক রিয়েলিটি শো ‘পালসার স্টান্ট ম্যানিয়া’ তে ১৩ তম হয়েছে,পেয়েছে প্রফেসনাল  স্টান্ট রাইডার এর সার্টিফিকেট। সেখান থেকে স্টান্ট বিষয়ে অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে তার,নিজেকে করে তুলেছে আরো দক্ষ।

বাইক স্টান্ট করে দেশের অনেক বাইকার এবং অনেক মানুষের বাহবা পেয়েছে।
পরিবার থেকে আগে সমর্থন না দিলেও এখন সমর্থন দিচ্ছে।তবে সবসময়ই  এ ব্যপারে তার সবচেয়ে বেশি  সমথর্ন দিয়ে গেছে তার বন্ধুরা।
আকিব ঘুরতে ভালবাসে।বাইকে চেপে ভ্রমণ করেছেন দেশের দর্শনীয় অনেক স্থান।
তবে যারা  স্টান্ট করতে চায় তাদের ব্যাপারে আকিবের পরামর্শ ”সতর্কতা  মেনে সবসময় বাইক স্টান্ট করা উচিৎ।  সঠিক প্রস্তুতি আর ঠিকঠাক নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করলে আঘাতের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
বাইক স্টান্ট নিয়ে আকিবের স্বপ্ন জানতে চাইলে আকিব বলে, " স্টান্ট রাইডিং কে বাংলাদেশের সবার কাছে লিগ্যাললি আর একটা ভাল স্পোর্টস হিসেবে তুলে ধরতে চাই যাতে মানুষ এটাকে খারাপ বলতে না পারে।"
বাইক স্টান্ট এর মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে এবং নিজের জেলা পিরোজপুরকে অন্য রূপে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় আকিব।

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে