Skip to main content

পিরোজপুর স্মৃতিচারণ পর্ব ১ : তারেক রানা চৌধুরী


লিখেছেন : তারেক রানা চৌধুরী 

ছবিটি দেখে মুহূর্তেই ৩০/৩২ বছর আগের পিরোজপুরে চলে গেলাম।

ফজলুল হক সেন্টু মামা ( সাবেক কমান্ডার, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ) তার ফেসবুকে ছবিটি দিয়েছেন ( সাদা টিশার্ট)। 

একদম ডানে এমদাদ ভাই। অনেকটা শৌখিন টাইপের মানুষ ছিলেন। গান গাইতেন। একটা মটর সাইকেল চালিয়ে শহরে নীরবে ঘুরে বেড়াতেন। তার ভাই ছিলেন জনাব আব্দুর রোউফ। বলিউড ফিল্মের আজকের ভাইজান সালমান খান Dabangg   বা আশির দশকের দাপুটে পুলিশ অফিসার ( অভিনয়ে) ররজনীকান্ত থেকে কোন অংশেই পিরোজপুরের সেই সময়ের পুলিশ সুপার জনাব আব্দুর রোউফ কে কমিয়ে বলা যাবে না।স্মার্টনেস এবং অপরাধ দমনে পিরোজপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার আব্দুর রৌউফ সাহেব কে এখনো অনেকে স্মরণে রেখেছেন।

আমরা পিরোজপুরের সেই কিশোর প্রজন্ম, যারা শহরের সিনিয়র ( রফিক আহমেদ রুস্তম মামা) ,  যুবা তরুনদের সাথে সরকারি স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলেছি, পক্ষে বা বিপক্ষে পেয়েছি এস পি আব্দুর রৌউফ, থানার তরুন ওসি তুষার ভাইকে।সদর থানার ওসি তুষার ভাই ও শহরে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তার সুন্দর ব্যাবহারের জন্য।

১৯৯২/৯৩ সালের দিকে পিরোজপুরের প্রাক্তন এস পি রৌফ  সাহেব চটগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে ( বা কাছাকাছি)  কর্মরত ছিলেন।একদিন তার অফিসে গিয়ে  চা খেয়ে এসেছিলাম, এতোটুকু মনে আছে।শত ব্যাস্ততার মাঝেও সময় দিয়েছিলেন। এমদাদ ভাই প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন, জুলি খালা কে।

( পিরোজপুরে ভাই, খালা, চাচা, দুলাভাই একই পরবারে আলাদা আলাদা সম্বোধন স্বাভাবিক বিষয়)।উনি আর পৃথিবীতে নেই।

লাল সোয়েটার পড়া হাফেজ মামা কে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছিলাম। একই পাড়ায় বাস।

হাফেজ মামা শুনেছি অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছিলেন।বিশেষ করে তথ্য মজলিস এর আশেপাশে।গাছগুলি কি আছে নাকি নাই, জানি না।

হাফেজ মামার অস্বাভাবিক মৃত্যু একটি দুঃখজনক ঘটনা।

ফজলুল হক সেন্টু মামা এবং আ ফ ম রেজাউল করিম কে নিয়ে লিখলে অনেক কিছুই লেখা যায়।

তারুন্যে সেন্টু মামার চকচকে গোঁফ দেখেছি, ২০০২/৩ এ ঈদগাহ ময়দানের আশেপাশে বা বাইপাসে পৌর মেয়র আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মালেক মামার সাথে সদলবলে শরীর ঠিক রাখতে দ্রুত হাটতে দেখেছি, এরপরে মামা শুনলাম সংসারের মায়াজালে নিজেকে সমর্পণ করেছেন। সেন্টু মামার জন্য শুভ কামনা সবসময়।

আ ফ ম রেজাউল করিম, যিনি কবিতাকে ধারন করে আছেন এখনো, জামাইর দোকানের প্রাণবন্ত আড্ডা আর দামোদর খালের বহু জোয়ার ভাটার স্বাক্ষি, অংকনের সেই স্বত্বাধিকারীর।

প্রয়াত হাফেজ মামা এবং এমদাদ ভাই এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

ছবিটি প্রকাশ করার জন্য সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক সেন্টু মামাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।


Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে