Skip to main content

স্বাধীনের স্বাধীন উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

লিখেছেন:জি,এম-আদল

মো:স্বাধীন  মৃধা

স্কুুল কলেজের সার্টিফিকেটে নাম রবিউল হলেও ডাক নাম স্বাধীন ।এলাকায় স্বাধীন নামেই সবাই চেনে। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই একজন সফল উদ্যোক্তা। গড়ে তুলেছেন ‘স্বাধীন কম্পিউটার ট্রনিং সেন্টার ও টেলিকম’। তুষখালীর জানখালিতে  ব‌্যবসায় সফল তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার তালিকায় স্বাধীন এক উজ্জ্বল তরুনের নাম।স্বাধীন মাধ্যমিক,  উচ্চ মাধ্যমিক এবং বি.এ  পড়াশুনা শেষ করে এখন মাস্টার্স এ ভর্তির অপেক্ষায়। 
মাত্র ২৩ বছর বয়সে কীভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হলেন জানতে চাইলে স্বাধীন বলেন, ‘খুব ছোট থেকেই নতুন কিছু করার প্রবল আগ্রহ ছিল। যার প্রতিফলন আজকের এই 'স্বাধীন কম্পিউটার ট্রনিং সেন্টার এ্যান্ড টেলিকম’। কিন্তু কালক্রমে সেটি যে আমাকে একজন সফল উদ্যোক্তা করে তুলবে তা কখনো ভাবতেই পারিনি।’
ব্যাবসার শুরুর গল্প বলতে গিয়ে এই তরুন উদ্যোক্তা জানান,  নিজের  দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। আর উৎসাহ দিয়েছেন তার বড় ভাই।২০১৮ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ‘স্বাধীন  কম্পিউটার এ্যান্ড টেলিকম'। 

তরুন এই উদ্যোক্তা আরো বলেন,
"প্রথমে পিরোজপুর  সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ  ইংরেজি ডিপার্টমেন্টে  ভর্তি  হইছিলাম।পরে  সাফা কলেজ দিয়া ডিগ্রি করছি।কারন ভেবে দেখলাম যে ইংরেজীতে অনার্স শেষ  করতে ৪ বছর লাগবে,তারপর খরচ ও বেশি, গ্রাম থেকে পিরোজপুর সদরে যাওয়া-আসা,থাকার খরচ, ফ্যামিলি থেকে অতোটা পারবে না।
ভাবলাম বসে থেকেও লাভ নাই,আর আমার কাজ জানা আছে, হাতের কাজটাকে কাজে লাগাই।অযথা আড্ডা দিয়ে কি লাভ,আর গ্রামের মানুষ ও কম্পিটার বা অনলাইন সম্পর্কে খুব বেশি জানে না,আর যারা জানে তারা দূরে কাজ করতে যায়,২টাকার ফটোকপি করতে তাদের নিম্ন ৩০টাকা খরচা হয়।আর চাকরির জন্য  নিম্নে ১০টা পরীক্ষা দিছি চাকরি  হয় নায়,আর কোম্পানীর চাকরি তো চাকরি!তাই নিজে কিছু করি,পাশাপাশি পড়াশুনাও ঠিক থাকবে ,কারো কাছে হাত পাততে হবে না।।
প্রথমে আমি একটা কম্পিউটার দিয়ে ট্রেনিং ও দোকানের কাজ শুরু করি,আর সাথে ছিল একটা প্রিন্টার।এখন আমার  ৪ টা কম্পিউটার হয়েছে।
বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা পুজি নিয়ে তার সাপোর্টেই ব্যবসা শুরু আমার।মা প্রথম বলছিল যে, এ দিয়ে কি হবে তার চেয়ে চাকরি বাকরি কর।কিন্তু আমি ভাবছি যে চাকরি করলে পড়া লেখা হবে না, কারন টাইম মত ছুটি পাবো না।পরে মাও আর নিষেধ করেনায়।"
স্বধীনের প্রতিষ্ঠানটি মাত্র কয়েক বছরে অর্জন করেছে অবিস্মরণীয় সাফল‌্য। হয়ে উঠেছে জানখালী বাজারের  অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে সময় দেয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পরে।মাত্র ৫০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন স্বাধীন । শুরুতে ঝুঁকি নিলেও, পরবর্তীতে এসেছে সফলতা। ব্যবসা করতে গেলে ঝুঁকি থাকবেই। তাই বলে পিছপা হননি ২৩ বছরের এই তরুন।
স্বাধীন  বলেন, "ধৈর্য্য এবং সততার সাথে সব সময় কাজ করেছি। প্রতিদানস্বরুপ আমার প্রতিষ্ঠান সফল হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে সফল হয়েছি আমি।"

ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তরুন এই উদ্যোক্তা জানান, তার প্রতিষ্ঠানটিকে আইটি ফার্মে রুপান্তর করার ইচ্ছাও আছে। এটি করতে পারলে বেকারত্ব নিরসনেও ভূমিকা রাখবে। এছাড়া সবসময়  চালু রাখবেন তরুণদের জন্য কম্পিউটার ট্রেনিং কোর্স।নতুন উদ্যোক্তা বা যারা নতুন পরিসরে ব্যবসা করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ধৈর্য্য, সততা, নিষ্ঠা, এবং অধ্যাবসায়ের সাথে কাজে লেগে থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের জানখালীর তোফেল আকন স্কুলের  নিকটে  অবস্থিত 'স্বাধীন কম্পিউটার ট্রনিং সেন্টার ও টেলিকম’। এখানে লাইব্রেরি,কম্পিউটার টাইপ, ছবি প্রিন্ট, ফটোকপি,কম্পিউটার প্রশিক্ষণ,মোবাইল রিচার্জ,বিকাশ,নগদ,রকেটে টাকা আদান প্রদান সার্ভিস সহ আরো নানা সেবা চালু রয়েছে।

Comments

  1. অনেক অনেক শুভ কামনা করছি।
    ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পিরোজপুর ডট কম কে।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে