Skip to main content

৫ ই মে ১৯৭১ পিরোজপুর এর মঠবাড়ীয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি কাল দিন


লিখেছেন:এমাদুল হক খান
বীর মুক্তিযোদ্ধা

পাকিস্তান আর্মির পদভারে জেলা শহর বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা সহ সমগ্র মাতৃভূমি ধংসস্তুপ ও রক্তে রঞ্জিত। মহকুমা শহরে সময়ের অপেক্ষা মাত্র,বরিশালের মেজর আঃ জলিল ক্যাপ্টেন বেগ সহ সুন্দরবন হয়ে ভারতের পথে এবং পিরোজপুর স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব এনায়েত হোসেন খান সহ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট জিয়াউদ্দীন তার বাহিনী নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সংবাদে মঠবাড়ীয়া স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক শহীদ সওগাতুল আলম সগীর ভাই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহ সভাপতি ডাক্তার মতিউর রহমানের বাসায় বৈঠক করেন এবং দুইটি সিন্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্রথমত, অস্ত্রধারী সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ব্যতিরেকে প্রশিক্ষনরত মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ রাতে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে,কেননা রাত ঝুঁকিপূর্ন এবং দিনে নিয়মিত প্রশিক্ষন নিবে। সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা কন্ট্রোল রুম ও কলেজ প্রফেসর হোস্টেল ব্যারাকে অবস্থানরত। তারা উভয়স্থলে সেন্ট্রি বাড়ানো সহ তুষখালী টি এন্ড টি অফিস ও মাঝের পুলে সেন্ট্রি বাড়াবে। মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হক মজনু খা ও মোঃ বেলায়েত হোসেন মঠবাড়ীয়ার টি এন্ড টি অফিস (বর্তমান পৌর ভবনের ওখানে) থেকে,পাক আর্মির ফোন আলাপ শুনে সগীর ভাই কে নিয়মিত অবহিত করবে। এমন ভাবে সতর্কতা ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়, যাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে কোন বেগ পেতে না হয়। শতাধিক আর্মস ধারী মুক্তি যোদ্ধারা সবাই ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমন্ট, ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর থেকে শক্ত অবস্থানে।
অপরদিকে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে মুক্তিবাহিনীর প্রথম কমান্ডার আর্মির অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার টিকিকাটা নিবাসী ফখরুদ্দীন। সে সঙ্গোপনে মুসলিম লীগের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে থানা সার্কেল অফিসার (সি আই) জালাল আহম্মেদ এ-র সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ নিয়ে সারেন্ডার করার পরিকল্পনা করতে থাকে।
ছগির মিয়া

 ৪ মে রাতে মঠবাড়ীয়া ও বুকাবুনিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যৌথ বৈঠক কবুতরখালী গ্রামে; পাক আর্মীর আগমনে করনীয় নিয়ে। সগীর ভাই গুলিশাখালী নিবাসী নায়েক আঃ লতিফ সহ ৭/৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে মোস্তাফা শাহ আলম দুলাল ভাইয়ের বাবা, আনসার কমান্ডার লালু মিয়া, দুলাল ভাই ও আমাকে নিয়ে রাত ৮টার দিকে কবুতরখালী বৈঠকস্থলে উপস্থিত হল।
অন্যদিকে সগীর ভাইসহ আমাদের অনুপস্থিতিতে বিশ্বাসঘাতক  ফখরুদ্দিন তার ষড়যন্ত্রের জাল চুড়ান্ত রুপ দেওয়ার সুযোগ পায়। পিস কমিটির প্রথম সভাপতি মঠবাড়ীয়াকে রক্তপাতাহীন রাখতে কমান্ডার ও সি আই জালালের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করেন কিন্তু এর জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের চরম মূল্য দিতে হয়, সে ভাবনার চেয়ে তাদের কাছে বড়ো হয়ে দাড়ায় পাক বাহিনী কে বিনা বাধায় মঠবাড়ীয়ায় স্বাগতম জানানো।
এদিকে কবুতরখালী আলোচনা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। আলেচনা মূলত পাক বাহিনীর  আগমনে কি কৌশল অবলম্বন এবং পরবর্তী করনীয়। বৈঠক থেকে ফেরার পথেই ঐ গ্রামে আমাকে সাপে কাটে এবং ভাগ্যগুনে সাপের ওঝার বাড়ি কাছেই থাকায় দুলাল ভাইদের বাড়িতে ওঝাকে ডেকে ঝারফুক সহ লতাপাতা দিয়ে পা বাধে। আমাকে নিয়ে বিপাকে পড়ায় এবং আরো নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সেখান থেকে সবাই আরো দুরবর্তী  গুলিশাখালী আব্দুল বারেস হাওলাদার বাড়ি নিয়ে যায়। বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক একে আজাদ এবির বাবা আব্দুল বারেস হাওলাদার।
সকাল বেলা আমাকে ঐ বাড়িতে রেখে সবাই মঠবাড়ীয়ার উদ্দেশ্য যাওয়ার পথে বয়াতির হাটে গিয়ে জানতে পারে,মঠবাড়ীয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের পতন ঘটেছে। ধর পাকড় সহ জয় বাংলার পতাকা নামিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উড্ডয়ন করা হয়েছে। দ্রুত সেখান থেকে এসে আমাকে নিয়ে নিরাপত্তার সস্বার্থে ডৌয়াতলা সগীর ভাইয়ের মামাবাড়ি মৃধা বাড়ী আশ্রয় নেওয়া হয়।
সাপে কাটার কারণে হয়তো এ যাত্রা আম্রা বেচেঁ যাই।
ঐ দিন বিকালের মধ্যে গোয়েন্দা মারফত জানতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের সুচনা লগ্নে প্রথম কমান্ডার ফখরুদ্দীনের বিশ্বাসঘাতকতাঁর কারনে ও কিছু টাকার লোভে পড়ে এবং পাক বাহিনীর আগমনের পদধ্বনির পুর্বেই কন্ট্রোল রুম সহ মুক্তিবাহিনীর বিপর্যয় ঘটে এবং পাক দালালদের এদেশীয় পা চাটা কুকুরদের দখলে চলে যায়। ঘটনার বিবরনে জানা যায়,৪ তাং রাতেই ফখরুদ্দীনের সাথে আরো ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা নামের কলঙ্ক বর্তমানে হিল্ট্রাকে বসবাসরত দঃমিঠাখালীর আঃ মন্নান, হাবিবুর রহমান  ও তালতলীর জনৈক মুক্তিযোদ্ধা এই কলঙ্কজনক অধ্যায় সম্পন্ন করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের বিরাট এক অংশ কলেজ ব্যারাকে ঘুমন্ত। বাকি মুক্তিযোদ্ধাদের  তুষখালী সহ বিভিন্ন জায়গায় টহলে পাঠিয়ে কন্ট্রোল রুমে তার অনুগত তিন জনকে নিয়ে মালখানায় (কোত খানা) থাকা সমস্ত অস্ত্র অতি ভোরে থানা পুলিশকে হস্তান্তর করে এবং চুক্তি অনুযায়ী থানার খাজানায় থাকা থানা পরিষদের ৮৭ হজার টাকা উত্তলন করেন। সি ও ডেভ বাবু মাখন লাল দাসকে বাধ্য করা হয় টাকা উত্তোলনে এবং কাগজে সাক্ষর  করতে। অথচ টাকা ফখরুদ্দীন গং ও সি আই জালাল বটোয়ারা করে নেয়। এর পরিনতিতে পাক আর্মীর পিরোজপুরের দায়িত্ব প্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এজাজ মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা দেয়ার অপরাধে (যা সম্পুর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট) বাবু মাখন লাল দাস-কে নিজ হাতে পশু ডাক্তারখানার সামনে গুলি করে হত্যা করে। পাশাপাশি আঃ জব্বার ইন্জিনিয়ারের মুসলিম লীগের পান্ডারা পুলিশের সহায়তায় জিয়া উজ্জামান, আনোয়ারুল কাদরী, গণপতি হালদার, গোলাম মোস্তাফা, আঃমালেক,জাকির হোসেন পনুৃ মিয়া স্যার , নুরুল ইসলাম বিএস সি স্যার, ফারুক উজ্জামান, অমল ও বীরেন-কে গ্রেপ্তার করে। এরা সবাই নবীন প্রশিক্ষন রত মুক্তিযোদ্ধা। নুরুল ইসলাম বিএসসি স্যার, জাকির হোসেন পনু স্যার ও ফারুক উজ্জামান-কে মোটা টাকার বিনিময়ে তাদের পরিবার মুক্ত করতে পারলেও বকি ৮ জনকে মুক্ত করতে ব্যার্থ হয়। ৮-ই মে পর্যন্ত তাদের আট জনকে থানা হাজতখানায় রেখে নির্মম ভাবে প্রহার করে রক্তাক্ত করে পিরোজপুরে প্রেরণ করে। ১০মে মধ্যরাতে পিরোজপুরের চানমারী খেয়াঘাটে  পাক আর্মির গুলিতে জোড়ায় জোড়ায় বেধে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

 ওই দিন (৫ মে) সকালে ফকরুদ্দীনের বিশ্বাসঘাতকতার সংবাদে কলেজে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা নিজ নিজ আর্মস নিয়ে নিরাপদ দুরত্বে সরে যায়। পরবর্তিতে মে মাসের মাঝামাঝি পুলিশের সাথে খণ্ডযুদ্ধে  ফুলঝুরি নিবাসী  দুর্দান্ত সাহসী আঃ রাজ্জাক বিশ্বাস ও আঃমোতালেব শরীফ ৩ জনকে হত্যা করে এবং তাদের মধ্যে আব্দুল মোতালেব শরিফ ঘটনাস্থলেই শাহাদাৎ বরণ করেন এবং আহত অবস্থায় আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস আত্মগোপনে থাকেন এবং ১৭/১৮ মে রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বাড়িতে সমাধিস্থ করতে না পারায় নদীর চরে তাকে সমাধিস্থ করতে বাধ্য হয়।

মজিবুল হক মজনু খাঁ, সাদিকুর রহমান সহ যুব মুক্তিযোদ্ধারা স্ব-স্ব আর্মস নিয়ে নিরাপদ স্থলে চলে যান।
আব্দুর জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের অনুগত ছাত্র সংগঠন টাইগার ফোর্স কে এম লতিফ ইনিস্টিটিউশনে অবস্থিত মঠবাড়িয়ায় নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার গুড়িয়ে দেয় এবং মিষ্টি বিতরণসহ উল্লাস করে।

মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে এরকম বিশ্বাসঘাতকতা না ঘটলে হয়তো টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনী বা ফরিদপুরের হেমায়েতবাহিনীর অনুরুপে মঠবাড়ীয়ার সগীরবাহিনী গড়ে উঠতে পারতো।

আজ এইদিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মঠবাড়ীয়ার মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক সওগাতুল আলম সগীর সহ মঠবাড়ীয়ার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ-দের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

 (বিঃদ্রঃ সুযোগ হলে সবিস্তরে পরিবর্তে সময়ে লেখার চেষ্টা করব)

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে