Skip to main content

পিরোজপুরের তারুণ্যের সংগঠন এক টাকার খাবার

লিখেছেন : জি,এম-আদল

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।মুখে অনেকেই অসহায় মানুষের ক্ষুধা মেটানোর আশ্বাস দিতে পারে, খুব কম মানুষই সেটা তার কর্মে  দেখাতে পারে।তবে পিরোজপুর শহরের "এক টাকার খাবার নামের" একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের একদল তরুন সেটা করে দেখিয়েছে।

মূল উদ্যোক্তা নাজমুল ইসলাম শুভ  

মাত্র এক টাকায় খাবার! পিরোজপুরের  পথে পথে এই খাবার বিতরন করা হয় আশ্রয়হীন অসহায় শিশু থেকে শুরু করে যেকোন অসহায় মানুষের জন্য।এক টাকায় এক প্যাকেট খাবার পেয়ে এই অসহায় মানুষগুলো খুশিতে হয় আত্মহারা আর এই সংগঠনের তরুনরা পায় অভুক্তকে খাওয়ানোর আত্মতৃপ্তি।
সবার জন্য  সুষম খাদ্য নিশ্চিতকরনকে উদ্দেশ্য করে একদল তরুন  স্বেচ্ছ্বাসেবীদের উদ্যোগে পিরোজপুরে গড়ে উঠেছে এই অসাধারণ সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।সংগঠনটির এমন উদ্যোগের কারনে পিরোজপুরের   দরিদ্র শিশু ও বৃদ্ধরা সপ্তাহে একদিন একবেলা এক টাকায় পেট ভরে ভাল মানের খাবার খেতে পারছে।
শায়েস্তা খাঁর আমলে ১ টাকায় আট মণ চাল মিলত। এক টাকা এখন নেহাত মূল্যহীন। সেই এক টাকার বিনিময়ে পিরোজপুরের  সুবিধাবঞ্চিত মানুষের  জন্য খাবার বিতরণ করছে এই  স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি । বিনা পয়সায় খাবার সরবরাহ করলে এই মানুষগুলো এটাকে ভিক্ষা  মনে করতে পারে, তাই এই  ১ টাকা মূলত খাবারের  প্রতিকি  মূল্য হিসেবে রাখা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও মূল উদ্যোক্তা নাজমুল ইসলাম শুভ জানান, ক্ষুধার্তকে এক বেলা সুস্বাদু খাবারের পরিতৃপ্তি দিতেই প্রাথমিক ভাবে তারা এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু করে।

পিরোজপুরে কিছু অসহায় ক্ষুদার্ত  পথশিশুর খাদ্যের  আকুতি দেখেই এক টাকার খাবার এর এমন ভাবনা শুরু করে শুভ।কিছু কাছের বন্ধুদের সাথে আলাপের পরে কয়েকজন তার সাথে এগিয়ে আসে।এরপরে পিরোজপুর বড় মসজিদ মোড়ে খাবার বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের ২২ মার্চ।প্রথমিক দিকে শুভ সহ তার সাথে ছিল মাত্র ৪ থেকে ৫ জন।তবে এই এক বছরের অধিক সময় তাদের সংগঠনের সেচ্ছাসেবী বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ জন।এখন প্রতি শুক্রবারেই তারা অসচ্ছল মানুষের মাঝে ১ টাকার প্রতিকি মূল্যে খাবার বিতরণ করে। এছাড়াও  সংগঠনটি পিরোজপুরের অসহায় মানুষদের জন্য  বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্রম করে থাকে।রোজায় অসহায় মানুষের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণ, নতুন পোষাক বিতরণ, শীতে শীতবস্র বিতরণ,ঈদ উপলক্ষে অসহায় মানুষদে জন্য আনন্দ আনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে "এক টাকার খাবার" নামে পিরোজপুরের এই সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও তারা থেমে নেই।এরই মাঝে তারা প্রায় ৯০০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ  করেছে।এ পর্যন্ত সংগঠনটি নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় দশ হাজার অসহায় মানুষকে সহযোগীতা করেছে।

সংগঠনটির সংগঠকরা স্বপ্ন দেখেন,এই কার্যক্রমের আওতায় তারা আরো অসহায় মানুষকে  নিয়ে আসতে পারবেন,সহযোগীতা করতে পারবেন।এক টাকার খাবার"এর সেচ্ছাসেবীরা আরো স্বপ্ন দেখেন,এদেশে কেউ ক্ষুধায় কষ্ট পাবেনা,সুস্বাদু ও পুস্টিকর খাবার সবাই পাবে,সবাই খাবে।




Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে