Skip to main content

প্রিয় মিজানুর রহমান ভুঁইয়া স্যার

লিখেছেন :আরিফ জামান

স্যার মিজানুর রহমান ভুঁইয়া

ঘটনার সময়ঃ ১৯৯৫ খ্রিঃ, 
স্থানঃ নটরডেম কলেজ, ঢাকা।
প্রেক্ষাপটঃ নটরডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ভাইভা,,,

ভাইভা বোর্ডে শিক্ষক ও ছাত্রের কথোপকথন,,,,,,

শিক্ষক- জীবনে কোন জিনিসটি সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ?
ছাত্র- (আমতা আমতা করতে থাকলো)
শিক্ষক- আচ্ছা, কোনটি বেশী জরুরী? প্রতিষ্ঠিত হওয়া না, ভালো মানুষ হওয়া??
ছাত্র- (এবারো আমতা আমতা করতে থাকে)
শিক্ষক- কয়েকটি Certificate দিয়ে কিছুই হবেনা, যদিনা আমরা মানুষ হতে না পারি।।

হ্যাঁ, এই স্মরণীয় উক্তিটি করেছিলেন যিনি,
তিনি প্রত্যেক নটরডেমিয়ানের আদর্শ,
স্যার মিজানুর রহমান ভুঁইয়া,
প্রাক্তন Department Head,
বায়োলজি ডিপার্টমেন্ট, নটরডেম কলেজ, ঢাকা।।

তিনিই আমার প্রিয় শিক্ষকদের একজন।।

"প্রাক্তন" কথাটা লিখতে অনেক কষ্ট হচ্ছে, কারণ, এই রকম স্যার হৃদয় থেকে কখনো প্রাক্তন হয় না।। এবং সেই ছাত্রটি ছিলাম আমি, এক নটরডেমিয়ান।।

তিনি ছাত্রদের কাছে বোমা মিজান স্যার নামেই বেশি পরিচিত।। প্রচলিত তথ্যমতে, এই নামটি মুক্তিযুদ্ধের সময় উনার বাহিনীর ছেলেদের দাওয়া, কারণ উনি খুব ভাল বোমা ছুড়তে পারতেন।।

তিনি একাধারে বোটানিস্ট, ফটোগ্রাফার এবং ট্রেইনার, সফটওয়্যার ডেভেলপার, প্রোগ্রামার এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক।। তিনি NDNSC এবং Bangladesh Nature Study Society-এর প্রতিষ্ঠাতা।। তিনি কারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট প্রাপ্ত, তিনি কয়েকটি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী প্রাপ্ত (including English) এবং ওয়াইল্ড লাইফ বায়োলজি-তে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট।। কিন্তু সবথেকে বড় কথা, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।।

তার পড়ানোর ধরণ ছিল অন্যরকম।। তিনি পড়াতেন শেষের ৫মিনিট এবং ২ ক্লাসের মাঝখানের ৫মিনিট।। বাকিটা সময় তিনি গল্প করে কাটিয়ে দিতেন।। ক্লাসের ৩৫ মিনিট তিনি শেখাতেন কিভাবে মানুষ হতে হবে।। কয়েকটি certificate দিয়ে কিছুই হবেনা যদিনা আমরা মানুষ হতে না পারি।। তিনি ছাত্রদের অনেক গালাগালি করতেন।। কিন্তু ছাত্ররা, তার গালাগালি শোনার জন্যই অপেক্ষা করতো।। বিশেষ করে "শুওর" শোনার জন্য।।  

তিনি ক্লাসে শেখাতেন ethics, philosophy এবং morality. তিনি ক্লাসে সবকিছু নিয়েই কথা বলতেন।। বাংলা সাহিত্য, English, chemistry, software engineering; এমন কিছু ছিলনা যেটা তিনি জানতেন না।।

এতকিছু যে তিনি করতেন তবুও কখনো পড়ানোতে ঘাটতি থাকত না।। তার ১০ মিনিটের পড়ানো সবার ৪০ মিনিটের পড়ানোর সমান ছিলো।।

যে শিক্ষা চিরস্মরণীয়-“কয়েকটি Certificate দিয়ে কিছুই হবে না, যদি না আমরা মানুষ হতে না পারি।।“
Trying to be a human being.

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে