Skip to main content

পিরোজপুরের বাঁশিওয়ালা ইমন

লিখেছেন :জি,এম-আদল

পেশায় ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র হলেও ক্যাম্পাস থেকে নিজ এলাকায় পরিচিতিটা বাঁশিওয়ালা হিসেবেই। এ পরিচয়ে তিনিও বেশ সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।যার কথা বলছি তিনি পিরোজপুর জেলার এক প্রতিভাবান তরুন।এই বংশীবাদকের নাম কামরুল ইসলাম ইমন।এই তরুন বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যায়নরত।
 তাঁর বেড়ে ওঠা পিরোজপুরেই। পিরোজুরের নিজ গ্রাম নামাজপুরেই শৈশব কৈশর কাটিয়েছেন। এই হাওয়া বাতাসেই বেড়ে উঠেছেন ইমন। মাধ্যমিক পড়েছেন পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এরপরে খুলনাতে ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করেন।
বাঁশিওয়ালা হয়ে ওঠার গল্প বলছিলেন ইমন,"বাঁশির সুর সব সময়ই আমাকে মুগ্ধ করত।ছোট বেলা থেকেই আমার গান-বাজনার উপর প্রচুর ঝোক ছিল।সেই কারনে ২০০৬ সালে পিরোজপুর শিল্পকলাতে ভর্তি হয়েছিলাম।সেখান থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করি।যখন মনে হল যে আমার আরো উন্নতি করতে হবে। সেই উদ্দেশ্যে খুলনাতে গেলে মা আমার মামাকে বলে একটা একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেয়।ওখানে আমি গানের তালিম নেয়া শুরু করি। আমার গুরুজি নিখিল কৃষ্ণ মজুমদারের অনুপ্রেরণায় অনেক কিছু শিখতে পারি। গানের পাশাপাশি আমি বাঁশিতেও পারদর্শী হয়ে উঠি। পিরোজপুরে প্রথম স্টেজে আমি আমার বাঁশি সুরের দক্ষতা প্রদর্শন করি।এই বংশীবাদক জীবনের অনেক ভাল লাগার স্মৃতি রয়েছে তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একবার ৪০ জন গিটারিস্ট স্টুডেন্টের সাথে আমি একাই বাঁশিতে সুর দিয়ে আংশগ্রহণ করেছিলাম।
আর একবার,শিল্পকলার নন্দন মঞ্চে ৬৪ টি জেলার বংশীবাদকদের নিয়ে আয়োজন হয়েছিল ওখানে আমি আমার পিরোজপুর জেলাকে বংশীবাদক হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম। নিজের জেলাকে প্রতিনিধিত্ব করার মাঝে অন্যরকম একধরনের প্রশান্তি কাজ করে।"
ইতিমধ্যে তার এই প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি নানা পুরস্কার অর্জন করেছেন। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ মাননীয় সাংস্কৃতিক সচিবের কাছ থেকে পেয়েছে প্রত্যয়ন পত্র।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনবরণ, পুনর্মিলনী থেকে শুরু করে জেলা উপজেলার  পয়লা বৈশাখ, বিজয় দিবসসহ এমন যেকোনো আয়োজনে ইমন আমন্ত্রণ পায় সামনের সারিতে আর ওই অনুষ্ঠানগুলোতে  তিনি তার বাঁশির সুরে বাঁধেন অতিথিদের।
নিজের স্বপ্নের কথা জানান ইমন," ভবিষ্যতে একটা  নিজ  ব্যান্ড দল গড়ার ইচ্ছা আছে। আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার,পাশাপাশি একজন শিল্পী। জানিনা মহান আল্লাহ কতদিন বাচিঁয়ে রাখেন তবে যতদিন বাচিঁনা কেন বাঁশি চর্চা চালিয়ে যাব এবং পিরোজপুরের নাম আরো উজ্জ্বল করব।"

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে