মহিউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে লিখেছেন তার ছেলে বুলা আহমেদ
মাঝে মাঝে একটা সময় সবার জীবনেই আসে যখন মানুষ সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে,তখন কারো পরামর্শ খুব জরুরী হয়ে পরে। সে সময় পাশে দাঁড়ানোর মতো আদর্শবান একজন মানুষ খুব প্রয়োজন।যাঁকে পথপ্রদর্শক হিসেবে অনুসরন করলে পথ হারাবার ভয় নেই।
সেই আদর্শবান মানুষটি যদি নিজের বাবা হয় তবে, সে ভাগ্যবান।
আমার জীবনে বহু কঠিন সময় বাবার হাত ধরে পার হয়েছি।বাবাকে আমি খুব ভালোবাসি এই কথাটি কখনো বলা বাবাকে হয়নি। মাঝেমাঝে মনে হয় এই কথাটি যদি একবার বাবাকে বলতে পারতাম তবে একটা আত্মিক শান্তি পেতাম।
আমি একজন সাহসী ও বিপ্লবী মানুষের সন্তান,যাঁর পরিচয় দিতে গর্বে বুক ভরে ওঠে।বাবা যখন চলে যান তখন আমি বুঝে উঠতে পারিনি।বাবা যে চলে গেছেন চিরতরে, আর কোনদিন দেখা হবে না।এ ব্যপারটা মাথায় কাজ করছিল না।
এখনো মাঝেমধ্যে স্বপ্ন দেখি, বাবা আর আমি হাঁটছি পাশাপাশি। প্রতিটি মুহুর্তে বাবাকে মনে পরে।
আমার সবসময় মনে হয় বাবা ছাড়া আমি একজন অসম্পূর্ণ মানুষ । বাবার কাছ থেকে বহু কিছু শিখেছি কিন্তু বাবার সাথে জীবনে আমার খুব অল্প সময় কেটেছে।যেহেতু বাবার জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে জেলে ফলে বাবার সাথে যখন প্রথম দেখা হয়,তখন আমার বয়স সাড়ে চার বছর।দেশে-বিদেশে, রাজনৈতিক অঙ্গনে বাবার সাথে আমার বহু স্মৃতি।
আমার বুকের গভীরে একটা স্মৃতিসৌধ আছে যার মুখোমুখি দাঁড়ালেই বাবাকে মনে পরে,দেখতে পাই সেই বটবৃক্ষকে যাঁকে ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। অনুভবে স্পর্শ করতে পারি তাঁর অস্তিত্ব।যাঁকে ছুঁতে না পারার বেদনা আমায় আহত করে।
বাবার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুর মত।
আজ ১২ই এপ্রিল বাবার তেইশ তম মৃত্যুবার্ষিকী কিন্তু আজও মনে হয় আমি আর বাবা পাশাপাশি শুয়ে গল্প করছি। বাবা তুমি আমার জীবনের ধ্রুবতারা।তুমি যেখানেই থাকো ভাল থেকো।
Comments
Post a Comment