Skip to main content

মিথ্যাচার

লিখেছেন: নুর হোসাইন মোল্লা

মিথ্যাচার একটি  জঘন্যতম অপরাধ। মিথ্যাবাদীকে কেউ বিশ্বাস করে না। তাকে সবাই  ঘৃনা করে।  প্রশ্ন হচ্ছে  মিথ্যাচার কি? অভ্যাসগতভাবে মিথ্যা  কথা বলা কিংবা  মিথ্যা কথা ও কাজে অভ্যস্ত হওয়াই মিথ্যাচার বা মিথ্যাবাদীতা।যে ঘটনা বা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তার যথাযথ  বিবরণ  না দিয়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা বিকৃতভাবে পরিবেশন করাই  মিথ্যাচার।মূলতঃ  যা নয়,তা প্রকাশ করাই মিথ্যাচার। মিথ্যা  কথা বলার পরিণাম  হচ্ছে  ধ্বংস।  ইহকাল ও পরকালীন  জীবনে মিথ্যাচার মহাবিপদ ডেকে আনবে। কারণ, মিথ্যাচার মানুষকে অসংখ্য পাপকাজে নিমজ্জিত করে।একটি  মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে আরো অনেক  মিথ্যা বলতে হয়। মিথ্যা কথা  সব পাপ কাজের জননী। আল্লাহ তাআলা  পবিত্র কুরআনের সুরা হজ্জের ৩০ নং আয়াতে বলেছেন, " তোমরা  বর্জন কর মূর্তিপূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাকো মিথ্যা কথা থেকে। " তিনি  সুরা আন নাহলের ১০৫ নং আয়াতে বলেছেন, ' মিথ্যা  কেবল তারাই রচনা করে, যারা আল্লাহর  আদেশ- নির্দেশে বিশ্বাস করে না।তারা মিথ্যাবাদী।" তিনি  সুরা আরাফের ৩৬ নং আয়াতে বলেছেন, " যারা আমার আদেশ - নির্দেশকে মিথ্যা  বলবে কিংবা  অহংকারবশত অস্বীকার করবে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী এবং  তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। "
মিথ্যা কথা বলার পরিণাম সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ রাঃ থেকে  সহী হাদিস গ্রন্হ আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত আছে যে,  রাসুল সঃ বলেছেন, " তোমরা মিথ্যা কথা ত্যাগ করবে।কারণ,  মিথ্যা কথা  মানুষকে খারাপ কাজে লিপ্ত করে আর খারাপ কাজ  মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে।যখন কোন ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা শুরু করে, তখন বারবার মিথ্যা কথা বলার কারণে,আল্লাহর দরবারে তার  নামটি  মিথ্যাবাদী হিসেবে  লিখিত হয়। এরপর রাসুল সঃ বলেন, তোমরা সত্য কথা বলবে। কারণ, সত্য কথা  মানুষকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যায় এবং কল্যাণ মানুষকে বেহেশতে  প্রবেশ করাবে।মানুষ  যখন সত্য কথা বলতে থাকে, তখন সব সময়ে  সত্য কথা  বলার কারণে, আল্লাহর  দরবারে তার নামটি সত্যবাদী হিসেবে  লিখিত হয়। " ( হাদিস নং ৪৯০৪)।  রাসুল সঃ বলেছেন যে,  মিথ্যা কথা বলা শিরকের চেয়েও  মারাত্মক  অপরাধ। " মিথ্যা কথা বলা মুনাফিকের নিদর্শন ।  মুনাফিক নিকৃষ্টতম ব্যক্তি। মুনাফিকের আলামত তিনটি  যথা - সে যখন কথা বলে  মিথ্যা বলে,যখন প্রতিশ্রুতি দেয়, তা ভঙ্গ করে আর তার কাছে  আমানত রাখা হলে,তা খিয়ানত করে।( বুখারী ও মুসলিম শরীফ) ।
রাসুল সঃ বলেছেন যে, কোন ব্যক্তি মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট যে,সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়। ( আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং ৪৯০৭) । রাসুল সঃ  শিশুদের মন ভুলানোর জন্যে অসত্য  কথা বলতে নিষেধ করেছেন।  হযরত আবদুল্লাহ  ইবনে আমির রাঃ থেকে আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত আছে যে," একদা আমার মা আমাকে ডাকেন,তখন আল্লাহর রাসুল সঃ আমাদের ঘরে ছিলেন।আমার মা আমাকে বলেন,তুমি এখানে এসো,আমি  তোমাকে কিছু  দিব। তখন রাসুল সঃ  আমার  মা কে জিজ্ঞেস করেন,তুমি  তাকে কি দিতে চাচ্ছ? তখন আমার মা বলেন,আমি  তাকে খেজুর দিব। একথ শুনে রাসুল সঃ  বলেন, তুমি  যদি তাকে কিছু না দিতে,তাহলে তোমার জন্যে একটি  পাপ লেখা হত।" (হাদিস নং ৪৯০৬)।হে আল্লাহ,  আমাদেরকে মিথ্যাচার থেকে  হেফাজত করুন।

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে