Skip to main content

পিরোজপুর এর বধ্যভূমিসমূহঃ



বলেশ্বর নদের ঘাট বধ্যভূমি
পিরোজপুরের বলেশ্বর নদের ঘাট ছিল বধ্যভূমি। এই নদের ঘাটের ওপর দাঁড় করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অসংখ্য নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করত। তারা স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় একাত্তরের ৬ মে দুর্নীতি দমন বিভাগের দারোগা হীরেন্দ্র মহাজনসহ আরও কয়েকজনকে এই ঘাটে গুলি করে হত্যা করে।

কাউখালী লঞ্চঘাট বধ্যভূমি
পিরোজপুরের কাউখালী লঞ্চঘাটে ১৯৭১ সালের ২২ মে পিরোজপুর কলেজের ছাত্র মোক্তাদিরুল ইসলামকে হাত-পা ভেঙে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কাউখালীর সুভাষ দত্তকে এই ঘাটে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া এই লঞ্চঘাটে চলে অনেক হত্যাযজ্ঞ।

তেজদাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয় বধ্যভূমি
১৯৭১ সালের জুন মাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পিরোজপুর সদরে তেজদাসকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে খালের পাড়ে একসঙ্গে ২৩ জনকে হত্যা করে।

কুড়িয়ানা বিদ্যালয় বধ্যভূমি
১৯৭১ সালে ৬ মে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে পাকিস্তানিরা ক্যাম্প তৈরি করে। তারা আটঘর-কুড়িয়ানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশের ডোবায় চার শ জনকে হত্যা করে। হত্যার পর তারা মাটিচাপা দিয়ে রাখে। স্বাধীনতার পর জয়দেব সিকদারের বাড়ির সামনের বধ্যভূমি থেকে ৭০টি মাথার খুলি উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি সেনারা ২১ দিন কুড়িয়ানায় ছিল। এ সময় দুটি বধ্যভূমিতে (জয়দেব সিকদারের বাড়ির সামনের বধ্যভূমি ও কুড়িয়ানা গ্রামের ভাড়ানি খালের পাশের বধ্যভূমি) হত্যা করা হয় তিন শতাধিক মানুষকে।

সোহাগদল বধ্যভূমি
পিরোজপুরে স্বরূপকাঠিতে সোহাগদল গ্রামের একই পরিবারের ৭ জনকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। তারপর গ্রামবাসী এই সাতজনকে এক কবরে মাটি দেয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ড চালায়, তার খবর গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ড চালায়, তার খবর গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
দইহারি ইউনিয়ন বধ্যভূমি
১৯৭১ সালের ২৪ মে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পিরোজপুরের দইহারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাড়িতে ১৭ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।

এ ছাড়া স্বরূপকাঠীতে ভরসাকাঠী, মৈশানি, জুজুখোলা, জুলুহার, সোহাগদল, অলংকারকাঠী, শশীদ ও সাগরকান্দা গ্রামে বধ্যভূমি, কুড়িয়ানা জয়দেব হালদারের বাড়ির বধ্যভূমি, পূর্ব জলাবাড়ী খালপাড় বধ্যভূমি, বলেশ্বরতীর, হুলারহাট টার্মিনালের সামনে, দীর্ঘা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে, ঘোষকাঠী বিদ্যালয়, শ্রী রামকাঠী বন্দর ও গাবতলা গ্রামে, কাউখালীতে কাউখালী লঞ্চঘাট, মঠবাড়িয়াতে মণ্ডলবাড়ি, বড়মাছুয়া ভেড়িবাঁধ, সাপলেজা, নলি বাড়ৈ বাড়ি গ্রাম, সূর্যমণি, আংগুলকাটা গ্রামে আছে বধ্যভূমি।

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে