এ আমার শহর- মানজুলুল হক

 


স্রোতের বিষণ্ণতা নেই, অধিনিয়ম টলমলে মধুবালা, 

শহুরে নদী ছুটে চলে তাহার লক্ষ্যে শ্রান্তিহীন চনচলা। 

শুভ্র দিবাকর উঁকি মারে প্রভাতে ঘুমন্ত শহর রাঙিয়ে,

শহরের প্রাণ, বলেশ্বর তখনও অবিরাম হাসে রাতের ক্লেশ লুকিয়ে।

আসমানে জলধর গর্জন হাঁকিলে, স্বরিৎ মন তব কামিনী। তীর ছোঁয়ায় নৃত্যে মাতাল ঊর্মির দল, দেখিয়া ধন্য অবনী।

মানুষের কোলাহলে মুখরিত পথ, জড়সড় রাস্তায় চেনা মুখ,

ক্লান্ত পথিক খুঁজে পায় ছায়া, নিরব প্রকৃতির সুখ।

শুঁকনো বাতাসে উড়ে প্রজাপতি, স্কুল বালিকারা হাসে,

ব্যাগ কাঁধে অবুঝ বালক প্রেম স্বপ্নে ভাসে।

স্কুল মাঠে খেলার সময় নবীন কিশোরের স্বপ্ন চোখে,

সুশ্রীরা সব পড়া শেষে ফুসকা প্লেটে আকাশ দেখে।

ইস্পা দেহে পাখি উড়ে আঁধার নামার আগে,

মনটা তখন বেকুল থাকে চায়ের নেশা জাগে।

সবুজ-শ্যমল বৃক্ষের মত মনুষ্যত্ব জীবিত, 

এই শহরে মানুষ আছে মানুষের জন্য বিনীত।

এ যেন শহর বন্ধুত্বের, বন্ধুহীনতার নেই ঠাই,

সৎপ্রকৃতির নকশা হৃদয়ে, শ্যাম-কালো-সাদা বিভেদ নাই।

অরন্যে অগ্রনী শব্দবহ, পুষ্প কোমল তরু ছাউনি,

সাদৃশ্য নেই কোথাও, মুগ্ধ নয়নে ধন্য আমি কাটে দিন-রজনী। 

দৃশ্য পটে আঁকা সবুজের সমারোহ প্রিয় মন নিবে কারি,

ঐতিহ্যে ঘেরা অবয়ব তাহার গা ছিম ছিমে রাজবাড়ী।

নবযৌবনপ্রাপ্ত'রা শোন- ভানু জাগার আগে এসো, অশ্বে চড়ে এসো।

প্রজ্বলিত প্রদীপ দিয়াছি জ্বালিয়ে, অতিথি হয়ে এসো, আমার শহরে এসো।

রাতের বলেশ্বর চন্দ্রিকা আলোয়, নৌকোয় গানের সুর,

নক্ষত্র জানে এ আমার শহর, সৌন্দর্যে ঘেরা পিরোজপুর। আমি বসুধা ঘুরে ঘুরে, তোমাতেই ফিরে আসি, 

তুমি প্রিয় শীতল সুখ, তোমাকেই ভালোবাসি।

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post