Skip to main content

করনা সমাচার : পাঁচ মিশালী


১।
আতংকিত হওয়া আর সচেতন  হওয়া সম্পূর্ণ  ভিন্ন বিষয়।  মানুষ আতংকিত হলে হলে বেশির ভাগ সময় ভুল কাজটিই করে৷ তাই আসুন এটাকে ভয় না পেয়ে যে যার জায়গা থেকে সঠিক কাজটি করার চেষ্টা করি যেটা আমাদের কতৃপক্ষ থেকে নির্দেশ  করা হয়েছে৷ তাহলেই আমরা এই বিপদ থেকে থেকে কম ক্ষতিগ্রস্ত  হয়ে মুক্তি পাবো। আমাদের মনে রাখা উচিত গুজব মানুষকে আতংকিত  করে আর সঠিক তথ্য করে সচেতন।

২।
সতর্কতা কেমন হবে! 
সোসাল ডিসট্যান্স সব থেকে ইফেকটিভ এটা প্রতিরোধ করতে। চীন থেকে যে টিম ইতালি গিয়েছে তারা জানিয়েছেন ইতালির এই বাজে অবস্থার জন্য তাদের দুর্বল লকডাউন দায়ি। লক ডাউনের প্রধান উদ্দেশ্য হল মানুষের মধ্যে ফিজিকাল দূরত্ব  বাড়ানো এবং সতর্কতা বৃদ্ধি।
★★
 দেশ বা দশের কথা ভাবার আগে নিজের কথা ভাবুন তাইলে দেশ ও দশের কথা ভাবা হবে৷  আমি ৫৫ দিন পুরো একটা ঘরের  মধ্যে কাটিয়েছি।  আলহামদুলিল্লাহ কারো কাছ থেকে করনা  গ্রহনও করিনি এবং কারো মধ্যে ছড়িয়েও দেইনি।আপনারাও নিজেকে সেচ্ছায় সবার কাছ থেকে আলাদা করুন।নিজেও সুস্থ থাকুন এবং অন্যকেও সুস্থ  রাখুন।
★★
প্রশ্ন উঠতে পারে গরীব  মানুষ কিভাবে কোয়ারেনটাইনে  থাকবে। কাজ না করলে তারা কি খাবে! 
যারা এই চিন্তাটা করেন তারা ফান্ড রেইজ করুন। পয়সার যোগান দিন। এটা একটা টিম ওয়ার্ক।সরকারি বেসরকারি সব পর্যায় থেকে কাজ করতে হবে।   সমস্যা  গুলো নিয়ে ভাবুন যে নিরাপদে থেকে কিভাবে সমস্যা  সমাধান করতে পারি। কন্ডিশন  একটাই নিরাপদ  ভাবে মাস্ক পরে এবং হাত সুরক্ষিত রেখে কাজ গুলো শেষ করতে হবে। জনসমাগম থেকে নিজেকে দূরত্বে  রাখতে হবে।
★★

৩।
একটা অণুগল্প;
চীনে তখন করনা ভাইরাসের মহামারীতে খুব বাজে অবস্থা। চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা থেকে ভাবলাম কিছু একটা করব এই দেশটার জন্য। আমি, ড. লাং আরো কয়েকজন মিলে একটা ফান্ডিং করার চেষ্টা করলাম। বাংলাদেশে সাধারন্ত N95 এবং আরো বেশ কয়েক পদের মাস্ক চীন থেকে যায়। একজন বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ  করলাম যিনি চীন থেকে বাংলাদেশ  মাস্ক ইমপোর্ট করে। তার কাছ থেকে কিনে কিছু মাস্ক চীনে ফিরিয়ে আনব এমন প্লান করেছিলাম।
তিনি মাস্কের দাম তার কেনা দামের থেকে ১০ গুন বাড়িয়ে দিলেন। এবং দেশে রমরমা  ব্যবসা করছেন মাস্ক স্টক করে।
 এর পর আমি যোগাযোগ  করলাম  কয়েকটা চীনা কম্পানিতে  তারা বলল এখন তারা মাস্ক দিতে পারবে না। কারন প্রতি ২৪ ঘন্টায় যত মাস্ক তৈরি হয় তা সব তারা সরকার  এর হাতে তুলে দেয় এবং সরকার  নিজ দায়িত্বে  পৌছে দেয় মানুষের হাতে। বিশেষ করে হসপিটাল এ।
আমি ভাবছি ওই বাংলাদেশী মাস্ক  ব্যবসায়ী যদি এখন মারা যায় তাইলে তার কবরে সব গুলো মাস্ক দিয়ে দেওয়া উচিত হবে৷ ওপারে যদি এই ব্যবসার সুযোগ হয়।
চীন বিপুল  পরিমাণ  মেডিকেল  সাপোর্ট পাঠিয়েছে।  আল্লাহ  যেন আমাদের  তা সুষ্ঠ ভাবে বন্টন  ও করার তৌফিক দেয়।
নিজের হাতে টাকা এবং সুযোগ থাকার ফলে আমাদের উচিত  হবে না প্রয়োজনের অতিরিক্ত  জিনিসপত্র মজুদ করে অন্যদের বঞ্চিত করা  এবং ঝুকি বৃদ্ধি করা।


তরুনরাই বাংলাদেশ
আমি অত্যান্ত আনন্দিত যে আমিও একজন তরুন। বিভিন্ন  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের এই বিপদের সময় তা সত্যই  অসাধারন। বিশ্ববিদ্যালয়ের  ল্যাবে ল্যাবে তৈরি হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। সকল পাবলিক ট্রান্সপোর্টে রাত দিন স্প্রে করছে। সতর্কতা ছড়াতে ডিজিটাল ও অনালগ দুই পদ্ধতিতেই চলছে প্রচেষ্টা। রাস্তায় রাস্তা মানুষে সতর্ক করছে তরুনরা। সমস্যা  সমাধানে দিন রাত ২৪ ঘন্টা কাজ করছে ছাত্র সংঘঠন,  এন,জি,ও।  বাংলাদেশ এই যুদ্ধে যে জয়ী হবে  তা এই তরুনদের আগ্রহ ও শক্তি দেখে বোঝা যায়।


সর্বশেষে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা  থেকে কয়েকটি টিপস।
★মাস্কের এবং হ্যান্ড গ্লোভস ব্যবহার এর সঠিক নিয়মটি শিখে নিন।শুধু করনা না এক জীবনে হয়ত আরো অনেক সময় কাজে লাগবে।
★ যেহেতু ভাইরাস নাক ও মুখ দিয়ে দিয়ে প্রবেশ করার প্রবনতা বেশি তাই নাম মুখ  স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকি। খুব প্রয়োজন হলে হাত পরিষ্কার করে নেই।
এবং হাচি কাশি দেয়ার সময় ভদ্রতা বজায় রাখুন।

★ কমন জায়গা গুলোতে হাত না লাগাই।
যেমন লিফ্টের বাটন, সিড়ির হাতল,  দরজার হাতল।
★চারপাশের মানুষের কাছ থেকে শারীরিক  ভাবে একটু দূরে থাকি। কম পক্ষে ১ মিটার।
★ মানসিক  ভাবে চাপ নেয়া যাবে না। সঠিক সময় ঘুম এবং খাবারের চেষ্টা করি।  বাড়ী থেকে দেশের এই বিপদে যতটুকু  সাহায্য  করা যায় তার চেষ্টা করি।
★ বিশেষ কোন তথ্য থাকলে তা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানাতে হবে। যেমন বিশেষ Syndrome. বা অন্য যে কোন অসুবিধা।
★ আপনার হাতে অতিরিক্ত  পয়সা,  খাবার , মাস্ক বা অন্য যে কোন সাপোর্ট  থাকলে তা অন্যকে দিন।  ভাল হয় যদি কোন ভলান্টিয়ার  টিম এর হাতে তুলে দেন তাহলে সঠিক ও নিরাপদ বন্টন হবে।

লিখেছেন:শহিদুল ইসলাম
চীন থেকে 

Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে