Skip to main content

স্বপ্নবিভ্রাট



লিখেছেন: রাশেদ রায়হান শুভ

মাঝরাতে লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠলো রাজু। সে স্বপ্নে দেখেছে দুধের ভেতরে নিমপাতার রস মিশিয়ে সেটা দিয়ে যদি আইসক্রিম বানিয়ে চেটে চেটে খাওয়া যায় তাহলে করোনা নামক ভাইরাসদের দেখতে পারবে সে, এমনকি কথাও বলতে পারবে তাদের সাথে। 

রাজু সময় নষ্ট না করে তখনই বের হয়ে গেল। সবাই করোনার আতঙ্কে বের না হলেও করোনা নিয়ে কোনো ভয় নেই রাজুর। কারণ সে থানকুনি পাতা খেয়ে নিয়েছে অনেক আগেই। এছাড়া সে গোবর না খেলেও নিয়মিত নাকে নিয়ে গন্ধ শুকে দেখে। 

নিমগাছ পেতে খুব বেশি কষ্ট হলো না তার। পাশের দুই বাসা পর মুন্নাদের বাসায়ই আছে নিমগাছ। তবে সমস্যা হলো সে গাছে উঠতে পারে না আর ডালগুলো সব নাগালের বাইরে। 

আশেপাশে লম্বা কিছু না দেখলেও ভাঙা ইটের স্তুপ চোখে পড়লো তার। রাজু কোনোভাবেই দেরী করতে রাজি না। তাই ইট দিয়ে ঢিল দিতে থাকলো। প্রতিঢিলে দুইএকটা করে পাতা পড়ল যা কুড়িয়ে একসাথে করে রাখলো রাজু। 

এর মধ্যেই একটি ঢিল গিয়ে পড়লো একদম মুন্নার ঘরের টিনের চালের উপর। মুন্না শব্দে ঘুম থেকে উঠে জানালা খুলে দেখলো কে যেন নিমগাছে ঢিল ছুড়ছে। মুন্না চোর ভেবে একটা বড় লাঠি নিল মারার জন্য। পেছন থেকে মারতে গিয়েই দেখলো এটা তার বন্ধু রাজু। 

রাজু মুন্নাকে সব ঘটনা খুলে বললো। মুন্না তো সব কথা শুনে খুশিতে গদগদ! মুন্না গাছে উঠে বিশাল বড় একটা ডাল পেড়ে আনলো। তবে মুন্নার একটা দাবি হলো রাজু যেন আর কাউকে না জানায়। 

মুন্না আর রাজু দুজনে মিলে বুদ্ধি করলো তারা করোনাদের সাথে কথা বলে তাদের বলবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে। তাদের যেকোনো ভাবে রাজি করাবে আর এর বিনিময়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে টাকা খেয়ে তারা রাতারাতি সবচেয়ে ধনী হয়ে যাবে। 

তারা মুন্নার বাসায় রান্নাঘরে চুপিচুপি গিয়ে ফ্রিজ থেকে দুধ বের করলো। এখন তারা পড়লো মহা ঝামেলায়। বুঝতেছে না ফ্রিজের দুধ দিয়ে হবে নাকি। তারথেকেও বড় ঝামেলা হলো রান্না করা দুধ লাগবে নাকি কাচা দুধ। 

রাজু বুদ্ধি দিল তারা কাঁচা দুধেরও আইসক্রিম বানাবে, রান্না করা দুধেরও। তারা অর্ধেক দুধ চুলায় বসিয়ে দিয়ে খুবই সাবধানে পাটায় নিমপাতা বাটতে থাকলো। তাদের ভাগ্য ভালো ছিল বলে বাসার কেউই টের পায় নাই। 

চারটা গ্লাসে তারা দুইটাতে গরম দুধ আর দুইটাতে কাঁচা দুধ নিয়ে তাতে নিমপাতার রস মেশালো। তারপর দুইটা করে ভাগ করে নিয়ে যার যার বাসায় গেলো দুজন। 

রাজু ফ্রিজের পাওয়ার সর্বোচ্চ করে দিয়ে একটু পরপরই দেখতে লাগলো জমেছে কিনা। প্রায় দুই ঘন্টা লাগলো জমতে। এর মাঝে সে অন্তত দশবার ফ্রিজ খুলে দেখেছে। মুন্নার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু না। 

রাজু সাধারণত কামড় দিয়ে দিয়ে আইস্ক্রিম খায়। তবে এক্ষেত্রে তা চলবে না। অর্ধেক আইসক্রিম খেতেই রাজুর মুখ তেতো হয়ে উঠলো। তার এখন মাতাল মাতাল লাগছে। তাতেও সে দমলো না। অনেক কষ্ট করে সে দুইটা আইসক্রিমই খেলো। 

সকাল ৬টায় দুজন দেখা করে জানতে পারলো দুইজনেরই বমি হয়েছে। তারা দুইজনই বাসা থেকে কিছু টাকা চুরি করে একবারে বের হয়েছে। তারা একদম করোনা খুঁজে পেয়ে তাদের সাথে কথা বলে তবেই বাড়ি ফিরবে। 

কিন্তু সমস্যা হয়ে গেলো তারা বুঝছে না তারা করোনাকে চিনবে কিভাবে। তারা ঠিক করলো প্রত্যেকটা জায়গা খুব সুন্দভাবে পরখ করে দেখবে তারা। 

দুইজনই মাঠে নেমে পড়লো। পথিমধ্যে একটা মাছির মতো সবুজ সবুজ পোকা দেখে লাফিয়ে উঠলো রাজু। সে পোকাকে ধরার চেষ্টা করলো আর চিৎকার করে বলে উঠলো, "করোনা ভাই থামো। আমি তোমাকে মারবোনা।" 

মুন্না মুখ চেপে ধরলো রাজুর। কানে কানে বললো মানুষকে জানানো যাবে না কিছু। চুপ কর। মুন্নাও দেখতে পেলো পোকাটাকে। সে সাথে সাথে নাকে হাত দিয়ে বলে উঠলো,"আরে শালা, এইটাকেও চিনিস না। এইটা গন্ধ পোকা। পাদের মতো গন্ধ। ভুলেও ধরিস না।" 

রাজু খুবই কষ্ট পেলো এটা করোনা না শুনে। তারা হাঁটতে হাঁটতে মেইন রাস্তায় এসে পড়লো। এখনও গাড়ি চলা শুরু করে নি। তবে কিছু হোটেল খুলেছে। তারা একটা হোটেলে বসে কিছু গরম গরম পরোটা আর ডাল খেয়ে নিলো। 

মুন্না একটা আতশ কাঁচ এনেছে সাথে। সে হোটেলের বেঞ্চ, পরোটা খুব ভালো করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে থাকলো। কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে এসে সামনে বসায় বেশি পরীক্ষা করতে পারলো না। তবে মুন্না কি যেন দেখতে পেল রাজুর মাথায়। 

খাবার খেয়ে বের হয়ে মুন্না আগে রাজুর মাথা দেখলো ভালো করে। দেখলো গাদা গাদা উঁকুন। মুন্নার সেগুলা দেখেই বমি বমি অবস্থা। সেটা দেখে রাজুরও আবার বমি হলো। 

নয়টা নাগাদ তারা বাসস্ট্যান্ডে এসে পড়েছে। তাদের ধারণা এখানে এই ভাইরাস পাওয়ার সম্ভবনা সর্বোচ্চ। বাসস্ট্যান্ডের প্রত্যেকটা জায়গা খুবই  তীক্ষ্ণ নজরে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলো তারা। নানা রকম ছোট ছোট পোকা দেখে সবার সাথেই ফিসফিসিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলো তারা। 

কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোনো পোকাই তাদের সাথে কথা বললো না। উপায় না পেয়ে তারা দুইজন ঠিক করলো ঢাকায় যাবে। কারণ সব রোগী ঢাকায়ই সনাক্ত হয়েছে। তাছাড়া আইইডিসিআর এর লোকদের সাথে তো তাদের কথা বলতেই হবে। 

হুট করেই তারা দেখলো মাস্ক ছাড়া সবাই দৌড়ানো শুরু করেছে। সেনাবাহিনী এসে হ্যান্ডমাইক দিয়ে বলছে, "বেশি বেশি সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড যাবত হাত ধুবেন। প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের হবেন না। মাস্ক ও গ্লাভস পরে বের হোন এবং বাসায় ঢুকে পরিষ্কার হোন।" 

শুনে মিটিমিটি হাসি শুরু করলো ওরা দুইজন। মুন্না রাজুকে বলা শুরু করলো, "দেখ সেনাবাহিনীও কি পরিমাণ ভীতু।" রাজু মুন্নাকে বললো "হবেনা কেন। যোগ্য কাউকে ঢুকায় না তো, খালি ১৩ লাখ।" এই বলে দুইজন হাসি শুরু করে দিল। 

হঠাৎ মুন্না নিজের পাছায় ঠাস করে আওয়াজ পেলো। সাথে ব্যথা। পেছনে তাকিয়ে দেখে এক সেনা সদস্য লাঠি দিয়ে বাড়ি দিয়েছে তাকে। সামনে তাকিয়ে দেখলো রাজু দৌড়ানো শুরু করে দিয়েছে। মুন্নাও রাজুর পেছনে পেছনে ভো-দৌড় শুরু করে দিল। 

নিরাপদ দূরত্বে দৌড়িয়ে যাওয়ার পর তারা ভাবলো যেকোনো উপায়েই একটা ঢাকার বাসে উঠে যেতেই হবে। সেনাবাহিনী চলে গেলে তারা বাসে উঠলো। তারা বাসে তাদের সিট পুরো পর্যবেক্ষণ করলো। কোনো পোকাই পেলো না। 

তবে দুজনের কেউই হাল ছাড়ার ছেলে না। রাতে ঘুম হয় নাই দেখে তারা ঠিক করে নিলো বাসেই ঘুমিয়ে নিবে যেন ঢাকায় গিয়ে ভালোভাবে কাজ করতে পারে। 

দুজনই ঘুমিয়ে পড়লো। অবাক করার বিষয় হলো প্রথমবার রাজু স্বপ্ন দেখলও এবার স্বপ্ন দেখলো মুন্না। সে স্বপ্নে দেখলো তাদের ফ্রিজে রাখার দুধে পানি ছিল তাই কোনোভাবেই তারা করোনা ভাইরাস দেখতেও পারবেনা, কথাও বলতে পারবেনা। 

মুন্না তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে রাজুকে ডেকে তুললো। কাঁদতে কাঁদতে রাজুকে সব জানালো। তারা নিশ্চিত যে ঢাকায় গিয়ে কোনোভাবেই পানি ছাড়া দুধ পাওয়া যাবে না। তাই তাদের বাড়ি ফেরা ছাড়া উপায় নেই। তারা সেখানেই গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়লো। 

তারা সেখানে নেমে উল্টো পথের গাড়ির জন্য প্রায় একঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পেলো না। উপায় না পেয়ে হাঁটা শুরু করলো সেই পথে। একজনের থেকে জানতে পারলো তাদের শহর এখান থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা একনাগাড়ে হাঁটলো। বড় একটা শহরে পৌঁছে গেছে তারা।  

অনেক কষ্টে একটা সিএনজি ওয়ালাকে দুই হাজার টাকায় রাজি করালো বাড়ি পৌঁছানোর জন্য। তাদের সেখান থেকে যেতে যেতে প্রায় রাত হয়ে গেলো। 

বাসায় গিয়ে দুইজনই পড়লো মহা ঝামেলায়। দুইজনকেই বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। তারা উপায় না পেয়ে তাদের আরেক বন্ধু রাফির বাসায় গিয়ে সব খুলে বললো। রাফি বললো তাদের বাসায় নাকি গরু আছে। ৩ জন খুশিতে কোলাকুলি শুরু করে দিল। 

সারাদিনের গভীর ক্লান্তিতে রাফির বেডে ঘুমিয়ে পড়লো রাজু আর মুন্না। রাফিকে বললো সবকিছু গুছিয়ে রাখতে। 

সকালে ৩ জনই একসাথে ঘুম থেকে উঠলো। তিনজনই একসাথে "আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি" বলেই শুকনো কাশি দিল। তিনজনেরই গলা খুশখুশ করছে। 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখন তিনজনই আইইডিসিআর এর দরজায় দরজায় ঘুরছে। কিন্তু তাদের কোনোভাবেই টেস্ট করানো হচ্ছে না। কারণ তারা বিদেশীর সংস্পর্শে আসে নি। শুধু স্বপ্নে দেখেছে তাদের করোনায় ধরেছে।


Comments

Popular posts from this blog

পিরোজপুর সদরের কিছু উল্লেখযোগ্য মজাদার খাবার ও খাবারের স্থানের নাম

১.আইচ পুরি ভান্ডার এর পুরি।দামুদার ব্রীজের ঠিক এক পাশেই ছোট্ট করে এই পুরির দোকান  । অনেক জায়গায় পুরি খেলেও এটাকে আপনার বেস্ট বলতে হবে কারন ডাল পুরিতে অনেক ডাল এবং আলু পুরিতে অনেক আলু দেয়।  সন্ধ্যার পর ভরপুর গরম গরম পুরি খাওয়ার লাইন‌ লাগে এই দোকানে । প্রতিটা পুরি মাত্র ৫ টাকা। যে পরিমাণ আলু,ডাল ‌ঠুসায় সেই তুলনায় দাম কমই বলা চলে।ট্রাই করতে পারেন কোন এক সন্ধ্যায় । ২.সিও অফিস, ডাচ বাংলা বুথের পাশের চায়ের দোকানের গরুর দুধের চা। ৩.জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে অবস্থিত ক্যাফে স্ট্রিট ফুড এর মালাই চা।পরিবেশন স্টাইল দারুন।দাম মাত্র ১৫ টাকা। ৪.দুলালের দধি ভান্ডারের রসগোল্লা, রসমালাই, দধি। ৫.ভাই ভাই মিস্টির দোকানের রসগোল্লা,দধি,রসমালাই। ৬.বেকুটিয়া ফেরিঘাটের রাস্তার পাশের ঝাল মুড়ি। ৭.পিরোজপুর পুরান বাসস্ট্যান্ডে খুলনা বাস কাউন্টারের পাশে দোকানের চিতই পিঠা।পিঠার সাথে মরিচ ভর্তা আর সরিষা ভর্তাটা জোশ লাগে। ৮.শেরে বাংলা মার্কেট এর বিপরীতে স্টার হোটেলে হট কফি। ৯.সিও অফিসের ওখানে ক্যাফে আল মদিনার চকলেট হট কফি,চকলেট কোল্ড কফি । দাম ৫০-৬০ টাকার মত লিখেছেন :জি,এম-আদল

পিরোজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

    লিখেছেন : জি,এম-আদল পিরোজপুর বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা।প্রকৃতি তার নিজ সাজে অপরুপ সৌন্দর্যে পিরোজপুর জেলাকে সাজিয়েছেন। নদীবিধৌত জেলা পিরোজপুরে রয়েছে সেরা কিছু দর্শনীয় স্থান।পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি, নাজিরপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়ীয়া, নেছারাবাদ এই সাতটি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত। এই উপজেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি উপজেলারই রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ভাসমান পেয়ারা হাট, কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা,রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি,হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক,ভান্ডারিয়া মিয়া বাড়ি মসজিদ,মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, পিরোজপুর এর ডিসি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  ভাসমান পেয়ারা হাট : পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার আটঘর,কুরিয়ানা নামক জায়গায়  নৌকায় করে এই (Floating Market) ভাসমান পেয়ারা হাট বসে। কবি আহসান হাবিব এর পৈত্রিক ভিটা: কবি আহসান হাবীব একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ভাষার অন্যতম একজন খ্যাতনামা কবি।  আহসান হাবীব এর জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি,পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে

পিরোজপুর জেলা নামকরণের ইতিহাস

পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে যেমন ইতিহাস রয়েছে ঠিক তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ,বিভাগ,জেলা ও এলাকা সৃষ্টির পিছনে রয়েছে হাজারো গল্প ও ইতিহাস। তেমনি পিরোজপুর জেলা সৃষ্টি ও নামকরণের পিছনেও রয়েছে নানা গল্প ও ইতিহাস। গবেষকদের মতে,আজকের এ পিরোজপুর সুলতানি আমলে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অঞ্চল পরিচিতি ছিল ফিরোজপুর নামে। মোগল সম্রাট শাহসূজার অকাল প্রয়াত পুত্র ফিরোজশাহের নামে 'ফিরোজপুর' এবং পরে অপভ্রংশ হিসেবে 'পিরোজপুর' নামকরণ হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলালউদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেষ বংশধর হিসেবে দাবী করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসেছিলেন এবং আত্মগোপনের এক পর্যায় নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পারে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয় এবং শাহ্ সুজা তার দুই কন্যাসহ আরাকানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী  এক শিশু পুত্রসহ থেকে যায়। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে